“দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিয়েটিভ আর্টস এওয়ার্ড ২০২৩” পেলেন নুরুন নাহার আহমেদ
প্রথম পাতা » শিক্ষাঙ্গন » “দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিয়েটিভ আর্টস এওয়ার্ড ২০২৩” পেলেন নুরুন নাহার আহমেদসৃজনশীল লেখনী ও সমাজকর্মের জন্য ICALDRC Linguistics Unit of Dhaka University নুরুন নাহার আহমেদকে The International Creative Arts Award -2023 (আন্তর্জাতিক সৃজনকলা পুরষ্কার ২০২৩ ) প্রদান করেছে । ২রা ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত Discussion on “Impact of Language & Literature on Enriching Minds and Inspiring Lives & The International Creative Arts Award-2023 Giving Ceremony “. অনুষ্ঠানে এই পদক ও সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড: মো: আবু নঈম শেখ, কী নোট স্পীকার ছিলেন ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউ,এস,এ এর অধ্যাপক নেছার ইউ আহমেদ( Fulbright scholar, US Public Diplomacy), বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্রে আজীবন সম্মাননা প্রাপ্ত নাট্যশিল্পী ডলি জহুর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড: একেএম শাহনেওয়াজ এবং The International Creative Arts Language & Development Research Centre ( ICALDRC) এর মহাসচিব অধ্যাপক লুৎফর রহমান জয়।
অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড: আসাদুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ICALDRC ভাষাতত্ব ইউনিট বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা, সাহিত্য প্রকাশনা, পরিবেশনা শিল্প, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জীবনঘনিষ্ঠ নন্দনশৈলীকে প্রত্যায়ন করে সৃজনশীলতার এই পদক ও সম্মাননা প্রদান করেছে।
আক্তারুন্নাহার রেহানা একজন লেখক,গবেষক,শিল্পী, শিক্ষক,সফল উদ্যোক্তা এবং ‘সম্প্রীতি ফাউন্ডেশন’এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান(জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক ও সনদপ্রাপ্ত)।১৯৮২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলাধীন ৪ নং রায় দৌলতপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত রসুলপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।পিতা মরহুম আলী আশরাফ মণ্ডল ও মাতা মরহুমা মৌলুদা বেগমের চার পুত্র ও পাঁচ কন্যার মাঝে তিনি অষ্টম।
ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন প্রখর মেধাবী ও জ্ঞানপিপাসু। চারপাশের চেনা পরিবেশ ও বড় ভাইবোনদের পড়ার টেবিল ছিল তাঁর জ্ঞানতৃষ্ণা নিবারণের কেন্দ্রবিন্দু।যখন যেখানে যা পেতেন তাই পড়ে ফেলতে চাইতেন তৎক্ষণাৎ। তাঁর এই জ্ঞান আহরণের দুর্নিবার প্রয়াস প্রথম আবিষ্কৃত হয় মেজ ভ্রাতা প্রফেসর ড.মিজানুর রহমানের বিচক্ষণ দৃষ্টিতে। পরবর্তীতে এই দৃষ্টিই তাঁর জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে। তৎকালীন সময়ে কন্যা সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে পারিবারিক ও বংশীয় নিষেধাজ্ঞার রেওয়াজকে অতিক্রম করে এই ভাইয়ের সহযোগিতাতেই তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে অবস্থান করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর কর্মজীবনে অনুপ্রবেশ ঘটে কলেজে শিক্ষকতা পেশার মধ্য দিয়ে।সময়ের ধারাবাহিকতায় তাঁর বহুমুখী প্রতিভার নানা শাখা-প্রশাখা নানাদিকে বিস্তৃত হলেও অদ্যাবধি তিনি শিক্ষার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শিক্ষকতা পেশাকে ধরে রেখেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন একমাত্র শিক্ষার মাধ্যমেই মানব শিশু মানুষ হয়ে উঠতে পারে। আর সত্যিকারের আলোকিত মানুষ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রেই আপামর জনতার মাঝে তিনি বিনিয়োগ করতে চান তাঁর সৃজনশীল প্রতিভাকে।
মাত্র ৬-৭ বছর বয়সে তিনি পিতৃহারা হন পরবর্তীতে হারান মাকেও! বড় হয়েছেন ভাইদের সংসারে। জীবনকে দেখেছেন বিবর্ণ পাণ্ডুরতায়! খুব শৈশব থেকেই প্রকৃতির সান্নিধ্য তাঁকে ভীষণভাবে টানতো। নিজের অজান্তেই হারিয়ে যেতেন প্রকৃতির মাঝে। স্বল্পভাষী,নিভৃতচারী,বিচক্ষণচিত্ত,সহনশীল ও পরোপকারী এই মানুষটি জীবনের একেবারে উষাকালেই অনুভব করেছিলেন সত্যিকারের ভালো মানুষের বড় বেশি অভাব।তাই নিজের কাছেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলেন,যে করেই হোক শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমেই একদিন তিনি আলোকিত মানুষ গড়ার দিশারী হবেন এবং সমাজের ক্ষতিকারক নানা সংস্কার ও মিথ্যার উচ্ছেদে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। নানা রকম চড়াই উতরাই ও ঝড় ঝঞ্ঝা পাড়ি দিয়ে শৈশবের সেই প্রতিজ্ঞাই তাঁকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। বিদ্যা,বিদ্বান ও কলম এ তিনের সাথে সংযুক্তি রেখে জ্ঞান,প্রেম ও শক্তির সন্নিবেশে তিনি স্বপ্ন দেখেন সম্ভাবনাময় এক আলোকিত পৃথিবীর।
ব্যক্তি জীবনে তিনি তিন কন্যার মা। কিন্তু তিনি তাঁর মাতৃত্বকে কেবল তিন সন্তানের মাঝেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান না। আপন হৃদয়ের স্নেহের ফল্গুধারাকে বিকশিত করে মাতৃত্বের এ মন্ত্রধ্বনিকে তিনি নিয়ে যেতে চান বিশ্বমাতার আঙ্গিক ও মাত্রিকতায়। আর তাই ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর ‘সম্প্রীতি ফাউন্ডেশন’প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসহায় ও অসুবিধা বঞ্চিত শিশু-কিশোর ও নারীর শিক্ষা,স্বাস্থ্য, সাবলম্বন,নিরাপদ মাতৃত্ব,নিরাপদ আবাসন ও লিঙ্গ বৈষম্যের নিরসনের মাধ্যমে আলোকিত মানুষ ও দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তুলে বিভেদ বৈষম্যমুক্ত মানবিক মহাসমাজের স্বপ্ন নিয়ে কবিগুরুর অমর বাণী
‘মা যে বিশ্বব্যাপী
এক সংসারের মাঝে থাকিয়াও
তিনি বিশ্ব সংসারের।’
এর চেতনাকে চিত্তে ধারণ করে বেরিয়ে আসেন পথে। মুক্ত জীবনের বিজয় কেতন তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে।সেই মুক্তির দিশায় তিনি উপলব্ধি করেন সেবা শুশ্রূষা ও চিকিৎসার মাধ্যমে অসুস্থ শরীর যেমন সুস্থ হয়ে ওঠে তেমনি সুন্দর আগামীর জন্য আমাদের অসুস্থ সমাজেরও শুশ্রুষা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সুষ্ঠু বিবেকবোধ সম্পন্ন ভালো মানুষের প্রয়োজনীয়তা একান্ত অনিবার্য।