সতর্ক গরমে খাদ্যাভ্যাসে থাকুন
প্রথম পাতা » ফিচার » সতর্ক গরমে খাদ্যাভ্যাসে থাকুনঅতিরিক্ত গরমে টিকে থাকাই দায়। এ সময় সুস্থ থাকতে খাবার গ্রহণের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে, কোন খাবার গরমে খাদ্যতালিকা থেকে কমিয়ে দিতে হবে অথবা কোনো খাবার একেবারেই খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
প্রচণ্ড গরমে শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়, যেমন– ১. দেহে সোডিয়াম কমে যাওয়া, পটাশিয়াম কমে যাওয়া, বমি হওয়া, খাদ্য হজম না হওয়া ও পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বর। এই গরমে যদি উচ্চ ক্যালরি পরিহার করে নিম্ন ক্যালরির খাদ্য গ্রহণ করেন, তবে আপনার ওজন কমবে। নিম্ন ক্যালরি খাবারের মধ্যে রয়েছে ফল (যেমন– তরমুজ, বাঙ্গি, জাম, জামরুল, ডাব ইত্যাদি) ও সবজি (যেমন– লাউ, পেঁপে, ঝিঙে, কুমড়া ইত্যাদি)।
২. গরমে তেলের ব্যবহার একেবারেই কমিয়ে দিন। কেননা এক গ্রাম তেল শরীরের ভেতর ৯ কিলোক্যালরি তাপ উৎপন্ন করে। উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতায় শরীরের তাপ বাইরে বেরোতে পারে না। ফলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে। এই গরমে বয়স্ক ও অতিরিক্ত ওজনের ব্যক্তিদের হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ে। ইদানীং ‘কোলেস্টেরল ফ্রি’ তেলের প্রচারণা বেড়েছে।
এ ক্ষেত্রে আপনার নিজস্ব বুদ্ধি যাচাই করুন। উদ্ভিদ উৎস থেকে আসা তেলে প্রকৃতিগতভাবেই কোনো কোলেস্টেরল থাকে না। এটি তেলের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। বিশেষভাবে উদ্ভিজ্জ তেলকে কোনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে কোলেস্টেরল ফ্রি করা হয়নি। কোলেস্টেরল ফ্রি তেলের প্রচারণায় সাধারণ মানুষ মনে করে, তেল খেলে কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু এ কথা পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে। ১ চা চামচ (৫ এমএল) তেল = ৪৫ ক্যালরি, ১ চা চামচ (৫ এমএল) ঘি = ৪৫ ক্যালরি, ১ চা চামচ (৫ এমএল) সরিষার তেল = ৪৫ ক্যালরি, ১ চা চামচ (৫ এমএল) সয়াবিন তেল = ৪৫ ক্যালরি; কোলেস্টেরল ফ্রি হোক বা না হোক, ৫ এমএল তেল বা ঘির ক্যালরি মূল্য কিন্তু একই।
অতিরিক্ত তেল গ্রহণের ফলে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে, যা আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াবে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি তো রয়েছেই। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি কোনোভাবে যে তেলই হোক না কেন, তা গ্রহণ করা যাবে না।
এই গরমে এখনই অতিরিক্ত তেল গ্রহণ, ডুবোতেলে ভাজা খাবার, ঘি, মাখন, পনির, মেয়নেজ, ফাস্টফুড, কোল্ড ড্রিংকস, পোলাও, কাচ্চি, গরু ও খাসির মাংস, ভুনা খাবার, অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার, অতিরিক্ত গরম ও ঠান্ডা খাবার পরিহার করুন।
লেখক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।