শিশুর ডায়রিয়া গরমে

প্রথম পাতা » ফিচার » শিশুর ডায়রিয়া গরমে


ফাইল ছবি

তীব্র গরমে বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরও ডায়রিয়া হচ্ছে। সাধারণত দুই বছরের নিচে শিশুর ডায়রিয়ার প্রধান কারণ রোটা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। এই ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া সাধারণত তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।

ডায়রিয়ার সবচেয়ে বড় জটিলতা হলো পানিশূন্যতা। পানিশূন্যতা দেখা দিলে শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে। যেভাবে বোঝা যাবে শিশুর পানিশূন্যতা হয়েছে–
• অস্থির ভাব, খিটখিটে মেজাজ বা নিস্তেজ হয়ে যাওয়া;
• চোখ গর্তে ঢুকে যাওয়া;
• তৃষ্ণার্ত ভাব বা একেবারেই খেতে না পারা;
• চামড়া ঢিলা হয়ে যাওয়া।
পানিশূন্যতার মাত্রাভেদে শিশুর চিকিৎসা নির্ধারণ করা হয়। উল্লিখিত লক্ষণগুলোর যে কোনো একটি থাকলে শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে।

পানিশূন্যতা এড়াতে কী করবেন–
• শিশুকে বেশি করে খাওয়ার স্যালাইন ও তরল খাবার, যেমন– ভাতের মাড়, চিড়ার পানি, ডাবের পানি, টক দই, ঘোল, ফলের রস ও লবণ-গুড়ের শরবত খেতে দিন।
• প্রতিবার পায়খানার পর শিশুকে ১০ থেকে ১৫ চামচ স্যালাইন খেতে দিন। মনে রাখবেন, স্যালাইন খাওয়াতে হবে ধীরে ধীরে, এক চামচ করে এক বা দুই মিনিট পরপর। একবারে
বেশি দিলে শিশুর বমি হতে পারে বা পায়খানা বেড়ে যাবে।
• শিশুর বয়স যদি ছয় মাসের কম হয়, তাহলে তাকে বারবার মায়ের দুধ খেতে দিন। কখনোই বুকের দুধ বন্ধ করা যাবে না। শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি হলে বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার অবশ্যই দিতে হবে।
• কাঁচকলা সেদ্ধ করে নরম ভাতের সঙ্গে চটকে দিন বা খিচুড়ির সঙ্গে কাঁচকলা দিন। প্রতিদিনের খাবার প্রতিদিন তৈরি করুন। সারাদিন কমপক্ষে ছয়বার, অর্থাৎ তিন-চার ঘণ্টা পরপর শিশুকে খাবার দিন। অল্প করে দিলে শিশুর পক্ষে খাবার হজম করা সহজ হবে। ১৫ দিনের জন্য জিঙ্ক সিরাপ বা বড়ি খেতে দিন।

কখন শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে
পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিলে, স্যালাইন বা অন্যান্য খাবার খেতে না পারলে, অতিরিক্ত তৃষ্ণা ভাব থাকলে, খুব বেশি পরিমাণ পানির মতো পায়খানা হলে, বারবার বমি হলে, তীব্র জ্বর থাকলে, পায়খানার সঙ্গে রক্ত গেলে শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে।

ডায়রিয়া প্রতিরোধে করণীয়
• জন্মের পর পরই শিশুকে শাল দুধ দিন এবং ছয় মাস পর্যন্ত বুকের দুধ খেতে দিন।
• শিশুকে নিয়মিত টিকা দিন।
• খাবার ও পানি ঢেকে রাখুন। বাইরের খাবার শিশুকে খাওয়াবেন না। বাসি খাবারও দেবেন না।
• কমপক্ষে আধা ঘণ্টা পানি ফুটিয়ে শিশুকে খাওয়ান।
• বিশুদ্ধ পানি দিয়ে শিশুর হাত-মুখ ধোয়াবেন; গোসল করাবেন এবং বাটি-চামচ ধুয়ে নেবেন।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, শিশু কার্ডিওলজি বিভাগ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।