গর্ভকালীন রক্তক্ষরণ: যা জানা জরুরি

প্রথম পাতা » ফিচার » গর্ভকালীন রক্তক্ষরণ: যা জানা জরুরি


ফাইল ছবি

গর্ভাবস্থায় রক্তপাত খুবই বিপজ্জনক। গর্ভকালীন মাসিকের রাস্তায় রক্তপাত হতে পারে। অনেকে এটাকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না। ফলে গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রথম তিন মাসে রক্তক্ষরণের কারণ
বিভিন্ন কারণে গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে রক্তক্ষরণ হতে পারে। ২০-৩০ শতাংশ গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসে রক্তক্ষরণ হতে পারে। প্রথম তিন মাসে রক্তক্ষরণের কারণে সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অনেক সময় অল্প অল্প রক্তক্ষরণ হয়; কিন্তু ঠিকমতো চিকিৎসা ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী থাকলে শেষ পর্যন্ত সন্তান প্রসব সম্ভব। জরায়ু ছাড়া পেটের ভেতরে অন্য কোনো জায়গায় (যেমন টিউব, ডিম্বাশয়) যদি ভ্রূণ স্থাপিত হয়, তবে তাকে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বলে। মাসিক বন্ধ হওয়ার পর পেট ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে হালকা রক্তপাত এর প্রধান লক্ষণ। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি কিনা তা জানা যায়। কিছু কারণে প্রথম তিন মাসে মাসিকের রাস্তায় রক্তক্ষরণ হতে পারে। তা হলো মোলার প্রেগন্যান্সি, যেখানে জরায়ুতে ভ্রূণের পরিবর্তে টিউমার জাতীয় সমস্যা হয় এবং এ অবস্থায় রক্তক্ষরণের সঙ্গে সঙ্গে আঙুরের থোকার মতো বের হয়। তবে একটা ব্যাপার জেনে রাখা ভালো, যেসব ভ্রূণের জন্মগত ত্রুটি থাকে, সাধারণত সেসব বাচ্চাই অ্যাবরশন হয়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে রক্তক্ষরণের কারণ
এ সময় রক্তক্ষরণের প্রধান দুটি কারণের একটি হলো গর্ভফুল জরায়ুর মুখের কাছাকাছি থাকা। যাকে বলা হয় প্লাসেন্টা প্রিভিয়া। যাদের আগে জরায়ুতে কোনো ধরনের অপারেশন যেমন– ডিএনসি, সিজারিয়ান বা যমজ বাচ্চা হয়, তাদের এমনটা হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। অন্যটি হলো গর্ভফুল জরায়ুর স্বাভাবিক অবস্থা থেকে একটু আলগা হয়ে যাওয়া। বিভিন্ন কারণে এ সমস্যা হতে পারে। যেমন প্রেশার বেশি থাকা বা পেটে কোনো কারণে আঘাত পেলে এ রকম হতে পারে।
করণীয় : প্রথমদিকে অল্প রক্ত গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্রাম ও চিকিৎসা নিলে ভ্রূণের অনেক সময় কোনো ক্ষতি হয় না। রক্ত বেশি গেলে সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। গর্ভাবস্থায় রক্তপাত ভয়াবহ ঝুঁকি বলে বিবেচিত হয়। এ সময় পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে এবং ভারী কাজ করা, ভ্রমণ ও সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হয়।
লেখক: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক