পেপটিক আলসার: যা জানা জরুরি

প্রথম পাতা » ফিচার » পেপটিক আলসার: যা জানা জরুরি


পেপটিক আলসার: যা জানা জরুরি

গ্যাস্ট্রিক বা আলসার নামটির সঙ্গে পরিচিত নন– এমন মানুষ নেই বললেই চলে। সাধারণত লোকজন গ্যাস্ট্রিক বা আলসার বলতে যা বোঝেন, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় তাকে বলা হয় পেপটিক আলসার।
সাধারণত খালি পেটে থাকলে আমাদের পেটের উপরিভাগে যে ধরনের ব্যথা বা জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়, তাকে গ্যাস্ট্রিক পেইন বলা হয়। গ্যাস্ট্রিক শব্দের প্রকৃত অর্থ পাকস্থলী বা স্টমাক। পেটের উপরি অংশে এ ধরনের ব্যথা অনুভূত হলে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় তাকে পেপটিক আলসার বলা হয়। তবে মনে রাখতে হবে, পেটের উপরি অংশের সব ব্যথার উৎসই পাকস্থলী নয়।
রোগের কারণ
মানুষের পাকস্থলী হাইড্রোক্লোরিক এসিড নামক খুব শক্তিশালী এসিড উৎপন্ন করে। একে নিষ্ক্রিয় করার জন্য শরীরের বেশ শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে। যখন এদের মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে এসিডের আধিক্য দেখা দেয়, তখন পাকস্থলীর গায়ে, গলনালির শেষাংশে ঘা বা আলসার হয়। পেটের এই ঘায়ের নামই পেপটিক আলসার। হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি নামক জীবাণু দিয়েও সরাসরি আলসার হতে পারে। আবার কিছু ব্যথানাশক ওষুধও আলসার হওয়ার জন্য দায়ী। ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, মানসিক চাপ ইত্যাদি পেপটিক আলসারের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়।
ডায়াগনসিস
বারবার পেটের উপরি অংশের মাঝবরাবর ব্যথা বা জ্বালাপোড়া করলে এবং এ ব্যথা খাওয়ার পরে কমে গেলে সেটিকে পেপটিক আলসার জাতীয় রোগ বলা হয়। তবে এ ধরনের উপসর্গ হওয়ার নানাবিধ কারণ রয়েছে। একমাত্র এন্ডোস্কোপি পরীক্ষার মাধ্যমে আলসার আছে কিনা, সেটি নিশ্চিত করা যায়। এন্ডোস্কোপি থেকে প্রাপ্ত নমুনা বা বায়োপসি থেকে বোঝা যায়, সেটি অন্য কোনো রোগের কারণে বা জীবাণু থেকে হয়েছে কিনা।
চিকিৎসা
চিকিৎসা শুরুর আগেই নিশ্চিত হওয়া জরুরি এটি পেপটিক আলসার কিনা। কারণ, পাকস্থলীর ক্যান্সার ও জিইআরডি এই জাতীয় রোগে কিন্তু একই রকম উপসর্গ থাকে। পেপটিক আলসারের চিকিৎসা শুরু করে দিলে ওই রোগগুলো নির্ণয় করা বেশ জটিল হয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এর চিকিৎসা শুরু করা উচিত। ধূমপান, অ্যালকোহল ও ব্যথানাশক ওষুধ কম খেলে এ রোগ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। জীবাণুর আক্রমণে এ রোগ হলে নিয়ম অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ও আলসার প্রতিরোধক ওষুধ খেতে হবে। অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ এ রোগের সাময়িক নিরাময় করে।
লেখক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।