বাংলাদেশি গবেষকের অভূতপূর্ব সাফল্য কোয়ান্টাম ফিজিক্সে

প্রথম পাতা » ফিচার » বাংলাদেশি গবেষকের অভূতপূর্ব সাফল্য কোয়ান্টাম ফিজিক্সে


গবেষণাটির নেতৃত্বে থাকা এম জাহিদ হাসান কোয়ান্টাম ফিজিক্স গবেষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন।ফাইল ছবি

দীর্ঘ ১৫ বছরের গবেষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা কোয়ান্টাম ফিজিক্সের কঠিন এক সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছেন। এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন এম জাহিদ হাসান, একজন বাংলাদেশি গবেষক।

নেচার ফিজিক্স জার্নালের ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সংখ্যায় এই গবেষণার তথ্য জানানো হয়। গবেষকরা বিসমাথ ব্রোমাইড নামের মাত্র কয়েক ন্যানোমিটার প্রশস্ত একটি বস্তু ব্যবহার করেন এবং কোয়ান্টাম কোহেরেন্স নামের একটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হন আগের তুলনায় বেশি তাপমাত্রায়।

কোয়ান্টাম মেকানিক্সের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হলো কোয়ান্টাম কোহেরেন্স। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অন্যান্য ধারণাগুলো, যেমন সুপারপজিশন এবং এনট্যাংগলমেন্ট - বুঝতে হলে কোয়ান্টাম কোহেরেন্স জরুরি। কিন্তু কোয়ান্টার কোহেরেন্স পর্যবেক্ষণ করতে খুবই কম তাপমাত্রা (প্রায় পরম শূন্য) প্রয়োজন হতো। তবে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির এই গবেষণায় সাফল্য প্রমাণ করে যে এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রাতেও কোয়ান্টার কোহেরেন্স পর্যবেক্ষণ সম্ভব। এই গবেষণার তুরুপের তাস ছিল বিসমাথ ব্রোমাইড। বেশি দূরত্বে এবং বেশি তাপমাত্রায় কোয়ান্টাম কোহেরেন্স ধরে রাখতে সক্ষম তা। অতীতের এক পরীক্ষায় বিসমাথ ব্রোমাইড তৈরি করেছিলেন এই গবেষকরা। তবে কোয়ান্টাম কোহেরেন্স পর্যবেক্ষণে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হলো এই প্রথম।

গবেষণাটির সাফল্য গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে তা ভবিষ্যতে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এমন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরিতে কাজে আসতে পারে। এছাড়া কোয়ান্টাম ফিজিক্স গবেষণা আরও এগিয়ে নিতেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। গবেষকরা আশা করেন এক সময়ে সাধারণ ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর বদলে ইলেকট্রনের কোয়ান্টাম বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে এমন ডিভাইস সার্বজনীনভাবে ব্যবহার হবে, ফলে বিশাল পরিমাণে বিদ্যুৎ খরচ কমে আসবে।

প্রিন্সটনের গবেষকরা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের সাথে মিলে কাজ করেন অনেক ক্ষেত্রেই, যেমন ইউনিভার্সিটি অব জুরিখ এবং বেইজিং ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি।

গবেষণাটির নেতৃত্বে থাকা এম জাহিদ হাসান কোয়ান্টাম ফিজিক্স গবেষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন ইতিমধ্যেই। প্রিন্সটনের ল্যাবরেটরি ফর টপোলজিক্যাল কোয়ান্টাম ম্যাটার অ্যান্ড অ্যাডভান্সড স্পেক্ট্রোস্কোপির নেতৃত্ব দেন তিনি। এছাড়া তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার লরেন্স বার্ক্লে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির একজন ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি সায়েন্টিস্ট, এবং কোয়ান্টাম ফেনোমেনা ইন টপোলজিক্যাল ম্যাটেরিয়ালস ক্ষেত্রে তার গবেষণার জন্য বেটি অ্যান্ড গর্ডন মুর ফাউন্ডেশন থেকে ইপিআইকিউএস-মুর ইনভেস্টিগেটর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।