শরীর ক্লান্ত লাগে যেসব কারণে

প্রথম পাতা » ফিচার » শরীর ক্লান্ত লাগে যেসব কারণে


শরীর ক্লান্ত লাগে যেসব কারণে

অনেক সময় আমরা বলি– শরীর ভালো লাগছে না, বেশি বেশি ঘুম হচ্ছে, ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হচ্ছে, ক্লান্তি বোধ হচ্ছে, কাজে গতি আসছে না, আলসেমি লাগছে ইত্যাদি। এর সবই হলো দুর্বলতার লক্ষণ। কেন শরীরে ক্লান্তি বা অবসন্নতা লাগে তা জেনে নিন।

পানিশূন্যতা : শরীরে ক্লান্তির একটি বড় কারণ পানিশূন্যতা। সারাদিন অন্তত ১০-১২ গ্লাস পানি পান করুন। তাহলে শরীর হালকা লাগবে। যারা শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করেন, তারা এর আধা ঘণ্টা আগে দুই গ্লাস পানি পান করুন।

অনিদ্রা : অনিদ্রা বা স্লিপ অ্যাপনিয়া থেকে ঘুমের সমস্যা হলে ক্লান্তি আসে। ঘুম খুব কম হলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে স্বাস্থ্যের ওপর। পূর্ণবয়স্কদের প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম হওয়া উচিত।

অ্যানিমিয়া : রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে এ অবস্থাকে অ্যানিমিয়া বলে। নারীদের ক্লান্তির অন্যতম কারণ রক্তস্বল্পতা। ঋতুস্রাব বা মাসিকের সময় অধিক রক্তক্ষরণ হলে লৌহ বা আয়রনের ঘাটতি হয়ে থাকে। রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শে আয়রন ট্যাবলেট খেতে হবে। এ ছাড়া লিভার বা কলিজা, কচুশাক, লালশাক রক্তস্বল্পতায় খুবই কার্যকর। এগুলো বেশি করে খেতে হবে।

হাইপোথাইরয়েডিজম : দেহে বিভিন্ন ধরনের হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে ক্লান্তিবোধ আসতে পারে। কোনো কারণে থাইরয়েড গ্রন্থির হরমোন উৎপাদন কমে গেলে তাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলে। গ্রন্থির কাজকর্ম কমে গেলে বিপাক চলে ধীরে ধীরে। ফলে শরীরে এনার্জি কম উৎপন্ন হয়, গতি স্লথ হয়ে যায় এবং ঝিমুনি ভাব চলে আসে।

ডায়াবেটিস : ডায়াবেটিসের কারণে শরীর হয়ে পড়ে অবসন্ন ও শক্তিহীন। এ জন্য অল্পতেই কারও যদি ক্লান্তি ভর করে, কিছুক্ষণ কাজ করলেই যদি ঝিমুনি ভাব চলে আসে, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করানো উচিত।

হৃদরোগ : প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্মে ক্লান্তি ভর করলে বা অল্পতেই শরীর দুর্বল হয়ে ঝিমুনি ভাব চলে এলে, বুক ধড়ফড় করলে, বুকের মাঝখানে চাপ অনুভব করলে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। কারণ, হৃদরোগও হতে পারে আপনার অজানা ক্লান্তির উৎস।

খাবার গ্রহণে অনীহা : শরীরে পর্যাপ্ত জ্বালানির জোগান না থাকলে ক্লান্তি ভর করে। অনেকক্ষণ ধরে না খেলে রক্তে সুগার কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে। ক্লান্তির চিকিৎসা করার আগে এর অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজন। তাহলে তার ওপর নির্ভর করে এর চিকিৎসা শুরু করা যায় এবং জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা যায়।

লেখক: নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল




আর্কাইভ