বাংলার পৃথিবীঃ গোপালগঞ্জে হোটেল-রেস্তোরাঁর বর্জ্য ফসলি জমিতে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক। প্রতিকার চেয়ে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন উপজেলার পিংগলিয়া গ্রামের ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার হিরোণ্যকান্দি গ্রামের ‘সাম্পান হাইওয়ে ইন রেস্টুরেন্ট’ থেকে হোটেলের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী পিংগলিয়া গ্রামের কৃষি জমিতে। এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশে দূষণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা, ঢাকা–যশোর-বেনাপোল রুটে চলাচলকারী শত শত যানবাহন সাম্পান হাইওয়ে ইন রেস্টুরেন্ট চত্ত্বরে যাত্রা বিরতি করে। অভিজাত এই রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ খাবার গ্রহন করেন। দিন–রাত বিপুল পরিমাণ বর্জ্য তৈরী হয় এখানে। চানাচুর, চিপস ও বিস্কুটের মোড়ক, পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতলসহ বিভিন্ন অপচনশীল দ্রব্যের সঙ্গে হোটেলের খাবারের উচ্ছিষ্ট ট্রাকে তুলে ফেলা হচ্ছে পিংগলিয়া গ্রামের ফসলি জমির পাশে। বর্জ্যের দুর্গন্ধে পাশের রাস্তায় পথচারীদের নাক চেপে চলাচল করতে হচ্ছে। বৃষ্টিতে ক্ষতিকর বর্জ্য কৃষকদের জমিতে গিয়ে পড়ছে।এতে জমির ফসলের ফলন কমে যাওয়া ও উর্বরতা নষ্টের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
পিংগলিয়া গ্রামের কৃষক ফিরোজ মোল্যা, বাচ্চু মোল্যা, মোরাদ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হোটেলের ক্ষতিকর প্লাষ্টিক বর্জ্য ফেলার কারণে এলাকার জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। সাম্পান হোটেল কর্তৃপক্ষকে এখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও তারা তা শুনছেন না। জমিতে হোটেলের বর্জ্য ফেলা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
পিংগলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোর্শেদ আলী খান বলেন, বর্জ্যের দুর্গন্ধে স্থানীয় বাসিন্দাদের নাক চেপে চলাচল করতে হচ্ছে। এছাড়া পরিবেশে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। যত্রতত্র এই বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে।
অভিযোগের বিষয়ে সাম্পান হাইওয়ে ইন রেস্টুরেন্টের ইনচার্জ জোহান আহমেদ বলেন, কৃষকদের অভিযোগের বিষয়টি জেনেছি। ওখানে আর ময়লা ফেলা হবে না।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে সাম্পান হাইওয়ে ইন রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন। পরিবেশ দূষণ রোধে তাদের সঠিকভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অবহিত করা হবে। সেভাবে পদক্ষেপ না নিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।