শিক্ষকরা মানববন্ধনে কাঁদলেন

প্রথম পাতা » ফিচার » শিক্ষকরা মানববন্ধনে কাঁদলেন


 শিক্ষকরা মানববন্ধনে কাঁদলেন

বাংলার-পৃথিবীঃ  প্রতিষ্ঠার ২৮ বছর ধরে ধারদেনা করে চলছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের বিভিন্ন খাত থেকে অর্থ নিয়ে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেন বলে জানিয়েছেন। স্কুলটির বার্ষিক বেতন-ভাতা বাবদ চাহিদা ১ কোটি ২০ লাখ টাকা হলেও ইউজিসি থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয় মাত্র ২০ লাখ টাকা; যা চাহিদার মাত্র ১৭ শতাংশ। এর আগেও বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আটকে থাকার অভিযোগ রয়েছে। এবার গত ডিসেম্বর থেকে বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্কুলটির শিক্ষকরা। বেতন-ভাতা চালু এবং স্থায়ী সমাধানের দাবিতে শনিবার মানববন্ধন করেছেন তারা। এ সময় তারা কান্নাজড়িত কন্ঠে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

জানা যায়, অর্থ সংকটে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন-ভাতা দিতে পারছে না। সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির ফলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে পর্যাপ্ত অর্থ না পাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে গত ডিসেম্বর মাস থেকে স্কুলটির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অন্তত ১৫ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুজাম্মিল হক মোল্লাহ, সহকারী শিক্ষক গোলাম মামুন, গোলাম কিবরিয়া, আনজুমান আরা ও ফেরদৌসী খাতুনসহ শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা চালুর দাবি সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। শিক্ষকদের দাবি, ইউজিসি স্কুলটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইআইইআর) ডেমোনেস্ট্রেশন ইউনিটের জনবল হিসেবে আত্মীকরণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজেদের জনবলদের বেতন-ভাতা দিলেও আমরা তা পাচ্ছি না। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যথাযথ তত্ত্বাবধানের অভাবে প্রতিষ্ঠার ২৮ বছর পেরোলেও এখোনো মানসম্মত অবস্থানে যেতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। যথোপযুক্ত তত্ত্বাবধান এবং পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারলে ভর্তুকি ছাড়াই নিজস্ব আয় দিয়েই স্কুলটি চলতে পারত বলে জানান তারা। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে আইআইইআরের পরিচালক মামুনুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইইআর এটা পরিচালনা করে। তবে এর বেতন- ভাতার বিষয়টা দেখে প্রশাসন।

ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, স্কুলের বেতন-ভাতা বাবদ যত টাকা প্রয়োজন তা আমরা পাই না। এখন স্কুলে বেতন দিতে অতিরিক্ত যে টাকা লাগবে তা আমরা কোথায় পাব? এ টাকা অন্য জায়গা থেকে আমরা ধার করে এতদিন দিয়ে আসছি। আমরা এ বিষয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। যত দ্রুত সম্ভব সমস্যার সমাধান করা হবে।

ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করার লক্ষ্যে ইউজিসি একটি কমিটি করেছে। আমরা ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করছি। দ্রুতই এর একটি স্থায়ী সমাধান করা হবে।




আর্কাইভ