পকেটের মধ্যেই সস্তায় আস্ত কম্পিউটার

প্রথম পাতা » ফিচার » পকেটের মধ্যেই সস্তায় আস্ত কম্পিউটার


আফ্রিকা মহাদেশ প্রযুক্তির নিরিখে পিছিয়ে রয়েছে, এমন ভাবমূর্তি দূর করতে চান উগান্ডার এক ইঞ্জিনিয়ার।নিজের দেশে কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়াতে তিনি সস্তার এক ডিভাইস সৃষ্টি করেছেন৷

আফ্রিকা মহাদেশ প্রযুক্তির নিরিখে পিছিয়ে রয়েছে, এমন ভাবমূর্তি দূর করতে চান উগান্ডার এক ইঞ্জিনিয়ার। নিজের দেশে কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়াতে তিনি সস্তার এক ডিভাইস সৃষ্টি করেছেন৷

আজকের যুগে সবাই প্রযুক্তির নাগাল পায় না। আর্থিক সামর্থ্যের উপর সেটা নির্ভর করে। উগান্ডার সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ইভান কারুগাবার বিশ্বাস, সব মানুষের কম্পিউটারের নাগাল পাওয়া উচিত। তিনি নিজেই এমন উদ্যোগে টাকা ঢেলেছেন। ২০১৭ সালে তিনি ‘ফিউজ স্টিক’ নামের সস্তার মিনি কম্পিউটার তৈরি করেন।

কারুগাবা মনে করেন, ‘মহাদেশ হিসেবে আফ্রিকার দিকে তাকালে বোঝা যায়, প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা বাকি বিশ্বের তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে আছি। আমরা উদ্ভাবন করতে পারি না, আফ্রিকার মানুষ সম্পর্কে এমন প্রচলিত ধারণা আমি বদলাতে চাই। তাই আমাদের মানুষের উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে আমরা এমন সব কিছুর নাগাল পেতে চাই।’

মিনি কম্পিউটার অনেকটা মেমরি স্টিকের মতো কাজ করে৷ তার মধ্যে সাধারণ কম্পিউটার প্রোগ্রাম ভরা রয়েছে। যে কোনো স্মার্ট স্ক্রিনে সেই স্টিক ঢুকিয়ে দিলে নিমেষের মধ্যে পুরোদস্তুর কম্পিউটারের সুবিধা পাওয়া যায়। সেটির মূল্যই আসল আকর্ষণ হতে পারে। ফিউজ স্টিকের বর্তমান মূল্য প্রায় ৭০ ডলার। উগান্ডায় প্রচলিত কম্পিউটারের তুলনায় যা প্রায় পাঁচ গুণ কম।

ডেন্টাল ছাত্রী হিসেবে সামান্থা আসিমওয়ে এক পরীক্ষামূলক ইউনিট হাতে পেয়েছিলেন। তখন থেকেই তিনি সেটি ব্যবহার করে চলেছেন। নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘আড়াই লাখ উগান্ডান শিলিং দিয়ে আমি একটি ইউনিট কিনেছিলাম। দারুণ কাজে লাগছে, কারণ আমি কার্যত এক টেলিভিশনের পর্দায় আমার সব কাজ করতে পারছি। আমি আমার রিপোর্ট প্রিন্ট করতে পারি, লিখতে পারি, আমার তথ্য জমা রাখতে পারি। মিউজিকের ব্যবস্থা থাকায় মাঝে মধ্যে কানে হেডফোন লাগিয়ে গানও শুনতে পারি।’

কারুগাবার মিনি কম্পিউটার চালাতে অপেক্ষাকৃত কম শক্তি লাগে। এর ফলে দাম আরো কমানো যাবে বলে তিনি আশা করছেন। তিনি বলেন,‘আমাদের ডিভাইস চালাতে প্রায় চার ওয়াট শক্তি লাগে। বেশিরভাগ এনার্জি সেভিং বাল্বের তুলনায় সেটা অনেক কম। এখানকার চূড়ান্ত ব্যবহারকারীর কাঁধে এমনিতেই জ্বালানি বাবদ ব্যয়ের বিশাল বোঝা রয়েছে। সাধারণ ল্যাপটপ চালাতে ৬৫ ওয়াট আর ডেস্কটপ সেটাপ চালাতে প্রায় ১২৫ ওয়াট লাগে। ফলে আমাদের পণ্য অনেক বেশি সাশ্রয় করে।’

এমন উপচে পড়া আবর্জনার স্তূপে কাম্পালার বেশিরভাগ জঞ্জাল গিয়ে পড়ে। তার মধ্যে পুরানো বাতিল কম্পিউটারের মতো ইলেকট্রনিক বর্জ্যও থাকে। পকেটে পোরা যায়, এমন ডিভাইসে ডেস্কটপ প্রযুক্তি ভরে দিয়ে কারুগাবা পরিবেশের ক্ষতি যতটা সম্ভব এড়াতে চান৷ তার মতে,‘আরো ছোট ডিভাইসের অর্থ কম উপকরণ। পণ্যের আয়ুর শেষে যখন সেটি ফেলে দেওয়া হয়, কম উপকরণের কারণে বর্জ্যও কম হবে।’

গত দুই বছরে কারুগাবা দেড়শোরও বেশি মিনি কম্পিউটার তৈরি করেছেন। আরো ডিভাইস উৎপাদনের জন্য সদ্য আর্থিক অনুদান পেয়ে কারুগাবা আরো বড় আকারে উৎপাদন বাড়িয়ে বাজারে প্রবেশের আশা করছেন।




আর্কাইভ