বাংলার-পৃথিবীঃ আফগানিস্তান প্রতিপক্ষ হিসেবে যতটা না কঠিন, ততটা রহস্যময়! কারণ যে কোনো দলকে যে কোনো ম্যাচে নাকানি-চুবানি খাইয়ে দিতে পারে তারা। যেমনটা ইংল্যান্ডের সঙ্গে করেছিল তারা। আগে ব্যাটিং করে ২৮৪ রান করে এরপর স্পিন দিয়ে পুরোপুরি ঘায়েল করে চ্যাম্পিয়নদের। সেই ম্যাচে তাদের তিন স্পিনার মুজিব-উর রহমান, রশিদ খান ও মোহাম্ম নবি– এই তিনজনই নেন আট উইকেট।
আজ আবার যখন তাদের সামনে পাকিস্তান, তখনও সেই স্পিন নিয়ে কথা হবে। কারণ ব্যাটিংয়ে আজ ভালো তো কাল খারাপ হলেও এই তিনজনের সুবাদে তারা ভীষণ ভয়ংকর। তাই টক্করটা হবে পেস বনাম স্পিনে। যদি বাবর-রিজওয়ানরা স্পিন এক্সামে পাস মার্কস তুলতে পারেন, তাহলে হয়তো জয় পাওয়াটা তাদের জন্য কঠিন হবে না।
অতীত পরিসংখ্যানও পাকিস্তানের পক্ষে। এক দিনের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত সাতবার আফগানদের মুখোমুখি হয়েছে দলটি। যেখানে একবারও হারতে হয়নি তাদের। কিন্তু ডার্কহর্স হয়ে বিশ্বকাপে খেলা আফগানিস্তানের কোনো কিছু হারানোর ভয় নেই। তাই চাপে থাকবে পাকিস্তানই। যে চাপ সইতে না পারলে মহাবিপদ। ম্যাচের আগে আফগান কোচ জনাথন ট্রটের কথায়ও তেমন পরিকল্পনার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, ‘আমি মনে করি, ম্যাচটা দু’দলকেই তাতিয়ে দেবে। অতীতেও যেটা দেখেছি আমরা। সে জন্য তাদের মধ্যে একটা যুদ্ধংদেহী মনোভাব কাজ করবে। এরই মধ্যে আমরা কয়েকটি ম্যাচে কাছে গিয়ে হেরেছি। আশা করি, আজ তেমন কিছু হবে না। তাদের স্পিন আক্রমণও ভালো। আসলে কেবল স্পিনারের পক্ষে ম্যাচ জেতানো সম্ভব নয়। কাজটা সবার। সাধারণত চেন্নাইয়ের উইকেট ভালো। আমাদের সেভাবে মনস্থির করতে হবে, সেখানে আমরা টিম গেম খেলব, কেবল স্পিনারদের ম্যাচ হবে না এটি। আমাদের লক্ষ্য থাকবে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখা।’
চাপে পাকিস্তান যে পিষ্ট হয়ে যায়, তার নজির অহরহ আছে। আবার চাপে তাদের তারকারাও যে ভালো খেলেন, সেটার উদাহরণও দেওয়া যায়। এতকিছুর পরও পাকিস্তানের আশার জায়গা তাদের টপঅর্ডার। সর্বশেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ওপেনার ইমাম-উল হক ও আবদুল্লাহ শফিক দারুণ ব্যাটিং করেছেন। এরপর অভিজ্ঞ মোহাম্মদ রিজওয়ানও আছেন ফর্মে। দুঃসময়ে এদের একজন কাণ্ডারি হতে পারলে পাকিস্তানের পথটা সহজ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে চোট, অসুস্থতায় জেরবার দলটির পেস আক্রমণ এখনও আলোচনার খোরাক। সর্বশেষ অসিদের বিপক্ষে একাই পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। আজকের ম্যাচেও তাঁর ওপর বাড়তি নজর থাকবে আফগান ব্যাটারদের। সেই সঙ্গে হারিস রউফ ও হাসান আলিরাও দ্যুতি ছড়াতে পারেন। এর বাইরেও চেন্নাইয়ের এই ভেন্যু পাকিস্তানের জন্য সুস্মৃতির। ঠিক ২৬ বছর আগে ভারতের বিপক্ষে যেখানে ওপেনিংয়ে নেমে ১৯৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সাঈদ আনোয়ার। ইমামরা সেই অতীত থেকে প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাইবেন নিশ্চয়ই।