বাংলার-পৃথিবীঃ বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি নিয়ে বিসিবির একজন কর্মকর্তার মূল্যায়ন হলো– কারও কারও জন্য শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজ হতে পারে এটি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্ষেত্রে এই তত্ত্ব খুবই কার্যকর। মিডলঅর্ডার এ ব্যাটার ইমপ্যাক্ট ক্রিকেট খেলতে না পারলে জাতীয় দলের পরিকল্পনা থেকে স্থায়ী বাদ পড়তে পারেন। মোটামুটি ভালো করলে পেতে পারেন বিশ্বকাপে যাওয়ার টিকিট।
সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়দের জন্যও একটা পরীক্ষা। দেশের মাটিতে এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো করতে না পারলে জাতীয় দলের পুল থেকে ছিটকে যেতে হতে পারে তাদেরও। কারণ, ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে দল নিয়ে নতুন পরিকল্পনা হবে এবং সেটা ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ মাথায় রেখে। নিজেদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার আর কিছুটা দীর্ঘ করার স্বার্থে এ দুই ক্রিকেটার সর্বস্ব বাজি রেখে হলেও ভালো করার চেষ্টা করবেন।
আসলে যাদের নিয়ে এত কথা তারা কে কোথায় ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন জানা নেই। টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় সৌম্যকে টপঅর্ডারে রাখা হলে ভালো। জাতীয় দলে নিজের সফল সময়ে টপঅর্ডারে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন। যেদিন থেকে বাঁহাতি এ অলরাউন্ডারকে মিডলঅর্ডার ব্যাটার বানানোর চেষ্টা হয়েছে, তখন থেকেই তাঁর পারফরম্যান্স নিম্নমুখী।
যদিও সম্প্রতি ইমার্জিং এশিয়া কাপে ছয় নম্বর পজিশনে খেলে মোটামুটি ভালো করেন তিনি। সে আলোকে জাতীয় দলে ফেরার সুযোগ মিলেছে।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ লম্বা সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেই। অনুশীলনকে পুঁজি করে অভিজ্ঞতা দিয়ে নিজেকে শেষ প্রমাণের চেষ্টা করবেন ৩৭ বছর বয়সী এ ব্যাটার। মূলত এশিয়া কাপে তরুণরা বাজে ক্রিকেট খেলে মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্যের বিশ্বকাপ দলে ফেরার পথ সুগম করে দিয়েছেন। বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহর পথ বেশি প্রশস্ত। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সিরিজে তরুণদেরও দেখার রয়েছে। ওপেনিং বা তিন নম্বর পজিশনে জাকির হাসানকে খেলাতে পারে। বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাকা করতে শেখ মেহেদীকেও ভালো ক্রিকেট খেতে হবে।
এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে অভিষেকে আলোড়ন সৃষ্টি করা তানজিম হাসান সাকিবের ওপরও ফোকাস থাকবে। বিশেষ করে নারীবিদ্বেষ, মূর্তি ভাঙা ও বিজয় দিবস পালনে না করা আর জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ না মেলানোর ফেসবুক স্ট্যাটাস, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, সেই উত্তাপ সামলে কেমন বোলিং করেন ২০ বছর বয়সী এ ফাস্ট বোলার সেটা দেখার।
এ ইস্যুটি নিয়ে গতকালের সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লিটনকে প্রশ্ন করার হলে তিনি উত্তর দেননি। বিতর্ক চাপা দিতে যে বোর্ড থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। আসরে ক্রিকেটাররা বিতর্ক পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে জন্য প্রস্তুত হতে চান। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ভালো ক্রিকেট খেলে কিছু অর্জন নিয়ে ভারতে যেতে চান তারা।
অধিনায়ক লিটনের মতে, ‘দেখেন, অর্জন করার তো অনেক কিছু আছে। আমরা যখন মাঠে নামব, তখন জেতার জন্য নামব। আপনি দেশের হয়ে ম্যাচ জিতবেন এটাই সবচেয়ে বড় জিনিস। আর নিঃসন্দেহে যেসব খেলোয়াড় আছে, তারা ভালো করলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা ভালো হবে।’
এই প্রস্তুতির ভেতরে লিটন নিজেও আছেন। অনেক দিন হলো তাঁর ব্যাটে রান নেই। রিয়াদ, সৌম্যদের মতো না হলেও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের জন্য অন্যরকম ফেরার সিরিজ এটি।