বাংলার-পৃথিবীঃ এশিয়া কাপে বেশ উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটিং। আজ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তো আবার পরের ম্যাচে রেকর্ড করে বসে। ধারাবাহিকতার লেশমাত্র নেই। এমন অবস্থায় ৯ দিনের ব্যবধানে আবার শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হচ্ছে টাইগাররা। প্রথম পর্বে হারের প্রতিশোধ সুপার ফোরে নিতে পারবেন কি সাকিব-মুশফিকরা! বিষয়টা অনেকটাই নির্ভর করছে ব্যাটারদের ওপর। ফাইনালের সম্ভাবনা ধরে রাখার জন্যও এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের। তবে কলম্বোর বৃষ্টি সব হিসাব পাল্টে দিতে পারে। আগামী সপ্তাহ কলম্বোতে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
৩১ আগস্ট পাল্লেকেলেতে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে মাত্র ১৬৪ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৫ উইকেটে হারতে হয়েছিল সেদিন। ওই এক হারে আসর থেকে ছিটকে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল টাইগারা। অবশ্য দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেই যেন টাইগারদের সেরাটা বেরিয়ে আসে। ওই হারের পর ১ হাজার ৭২৫ মাইল পাড়ি দিয়ে তিন দিনের ব্যবধানে লাহোরের ভয়াবহ গরমে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নেমে এশিয়া কাপে নিজেদের সর্বোচ্চ ৩৩৪ রান তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই লাহোরে ব্যাটিং স্বর্গেই আবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৩ রানে অলআউট। যদিও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কলম্বোতে ভুল শুধরে নামার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে কাজটা এত সহজ হবে না। এর বড় কারণ উইকেট। লাহোরের উইকেটে ভুল না করলে কাউকে আউট করা কঠিন। বল চমৎকারভাবে ব্যাটে আসে। সে তুলনায় শ্রীলঙ্কার উইকেট ঐতিহাসিকভাবেই কিছুটা মন্থর। কলম্বো ও পাল্লেকেলে উভয় উইকেটেই বল নিচু হয় এবং মন্থর। বাংলাদেশের জন্য এটা এক দিক থেকে সুবিধাই। কারণ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের মতো বিশুদ্ধ ব্যাটিং উইকেটে সাধারণত বাংলাদেশ দল খেলে না। মিরপুর-চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্রই মন্থর উইকেট। তাই কলম্বোতে ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরাজয়ের শোধ নেওয়ার পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার জয়রথ থামানোর চ্যালেঞ্জও টাইগারদের সামনে। যদি আজ শ্রীলঙ্কা জিতে যায়, তাহলে তারা টানা ম্যাচ জেতার রেকর্ডে দ্বিতীয় স্থানে উঠে যাবে। ওয়ানডেতে ২০০৩ সালে টানা ২১ ম্যাচ জিতে রেকর্ড করেছিল অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কা টানা ১২ ম্যাচ জিতে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে আছে। আজ জিতলে লঙ্কানরা এককভাবে দ্বিতীয় হয়ে যাবে। এই চ্যালেঞ্জিং ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ওপেনিংয়ে পরিবর্তন আসার একটি সম্ভাবনা রয়েছে। গত তিন ম্যাচে ব্যর্থ ওপেনার নাঈম শেখের বদলে প্রথম ম্যাচের পর বাদ পড়া তানজিদ হাসান তামিমকে ফেরানো হতে পারে। তবে একাদশে পরিবর্তন না এলেও ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তনটা নিশ্চিত। মেহেদী হাসান মিরাজকে এ ম্যাচে ওপেনিংয়ে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নাঈম বা তানজিদ যে কোনো একজনের সঙ্গে ওপেন করবেন লিটন। মিরাজ আটে ফিরে যাবেন। তিনে দেখা যেতে পারে আফিফকে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার একাদশে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
অতীতে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের উইকেট একটু বেশি মন্থর হলেও ইদানীং কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। গত পাঁচ বছর দিবারাত্রীর ম্যাচে এ স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে গড় রান ২৬৭, পাল্লেকেলেতে যা ২৫৫। তবে সব কিছু ছাপিয়ে ম্যাচের নিয়ন্তা হয়ে উঠতে পারে বৃষ্টি। পুরো দিনেই কলম্বোতে বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গতকাল দুপুরে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেখা গেছে শনিবার কলম্বোতে বৃষ্টির সম্ভাবনা ৬৮ শতাংশ। সন্ধ্যায় সে সম্ভাবনা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে।