বাংলার-পৃথিবীঃ নান্দাইল উপজেলার চরকামটখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘ওয়াশ ব্লক’ ভেঙে পড়েছে। গত ১২ আগস্ট রাতে এই ঘটনা ঘটে। ‘ওয়াশ ব্লকটি’ কত বছর আগে কোন ঠিকাদার নির্মাণ করেছিলেন, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজের কারণেই নির্মাণের এক বছরের মধ্যেই ওয়াশ ব্লকটির এই পরিণতি হয়েছে।
নান্দাইল শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে চর বেতাগৈর ইউনিয়নে চরকামটখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। হাটশিরা বাজার থেকে আতাউরের মোড় পর্যন্ত বেড়িবাঁধের পাশে অবস্থিত বিদ্যালয়ের মাঠের পূর্ব পাশে বছর খানেক আগে নির্মাণ করা হয় একটি ‘ওয়াশ ব্লক’।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এটি। শুরু থেকেই ‘ওয়াশ ব্লক’ নির্মাণে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ কানে তোলেননি কর্তৃপক্ষ। গত ১২ আগস্ট রাতে ভেঙে পড়েছে ওয়াশ ব্লকটি। ভেঙে পড়েছে ট্যাঙ্কির ওপরের স্ল্যাবটিও।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ভেঙে পড়া ওয়াশ ব্লকের ওপরে দাঁড়িয়ে দেখছে কয়েক শিশু-কিশোর। এ সময় শিক্ষার্থী আলিফ হোসেন বলে, ‘ভালা কইরা বানাইছে না, এর লাইগ্যাই ভাইঙ্গা পড়ছে।’ তার সঙ্গে কথা বলার সময় হাজির হন জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি। নিজেকে বিদ্যালয়ের দপ্তরি পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে এটি ভেঙে পড়েছে। কোন ঠিকাদার কাজটি করেছিল জানতে চাইলে নাম বলতে পারেননি তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আপন ভাই। এ কারণে নিজেদের ইচ্ছে মতো সব কাজ করে থাকেন তারা।
ইউপি সদস্য আজিজুল হক জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কারও মতামতের তোয়াক্কা না করে তাদের খেয়াল খুশি মতো কাজ করে।
তবে প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান ফরিদ জানান, ওয়াশ ব্লকটি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়। ভেঙে পড়ার দুই দিন আগে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। ইঁদুরের গর্তে পানি ঢুকে ওয়াশ ব্লকের নিচের মাটি সরে যাওয়ায় সেটি ধসে পড়েছে। নিম্নমানের কাজের অভিযোগটি সত্য নয়। তিনি বলেন, স্থানীয় আব্দুল আজিজ নামে একজন ঠিকাদার ওয়াশ ব্লকটি নির্মাণ করেছেন। তবে কাজটি করার কথা অস্বীকার করেছেন ওই ঠিকাদার।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সোহেল মিয়া জানান, ওয়াশ ব্লক ভেঙে পড়ার খবর শুনেছেন। এর বেশি কিছু জানতে হলে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
নান্দাইল উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রেবেকা সুলতানার ভাষ্য, প্রায় ১০ বছর আগে ওয়াশ ব্লকটি নির্মাণ করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক ঠিকাদার কাজটি করেছেন। কত টাকা ব্যয়ে কাজটি করা হয়েছিল, কাগজপত্র না দেখে বলা যাবে না। নতুন একটি ওয়াশ ব্লক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।