দাম বেড়েছে পেঁয়াজ-রসুনের

প্রথম পাতা » অর্থ ও বানিজ্য » দাম বেড়েছে পেঁয়াজ-রসুনের


 ফাইল ছবি

বাংলার-পৃথিবীঃ    নিত্যপণ্যের বাজারে বেশিরভাগ পণ্য উচ্চমূল্যে স্থির হয়ে আছে। নতুন করে পেঁয়াজ, দেশি রসুন ও ডালের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে অস্বাভাবিক বাড়ার পর দাম কমেছে কাঁচামরিচের। রেকর্ড গড়ে রথ থেমেছে ডিমের। অন্যদিকে কিছুটা স্থিতিশীল দেখা গেছে সবজি ও চালের বাজার। ভোক্তারা বলছেন, যে কোনো পণ্যের দাম লাফিয়ে বাড়লেও কমে ধীরগতিতে। আবার কমলেও আগের পর্যায়ে নেমে আসে না। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের আয় বাড়ছে না। এ জন্য বাড়তি ব্যয় সামাল দিতে প্রয়োজনের তুলনায় কম কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

দুই মাস ধরে উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে মসলা জাতীয় প্রায় সব পণ্য। এর মধ্যে নতুন করে কিছুটা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সাত-আট দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পাইকারি পর্যায়ে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি ৮০ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে সেগুনবাগিচা ও হাতিরপুল কাঁচা বাজারে খুচরা পর্যায়ে এ মানের পেঁয়াজের দাম উঠেছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। তুলনামূলক দুর্বল মানের দেশি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৮০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা ভালো মানের পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং দুর্বল মানের পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চার-পাঁচ দিনে দেশি রসুনের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা রসুনের দামও ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আদা, জিরাসহ অন্যান্য মসলার দামও বাড়তি।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গত এক মাসে দেশি পেঁয়াজ ১২ ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২৮ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া এক মাসের ব্যবধানে দেশি রসুনের দাম বেড়েছে ৬৪ শতাংশ।

বেশ কয়েক মাস স্থির ছিল মসুর ডালের দাম। তবে তিন-চার দিনের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। এতে খুচরা বাজারেও কেজিতে পাঁচ টাকার মতো বেড়েছে। সম্প্রতি সয়াবিন তেল ও চিনিতে ৫ টাকা করে কমলেও এখনও পণ্য দুটির উচ্চমূল্যই রয়েছে বলা চলে। চালের বাজারও উচ্চমূল্যে স্থির রয়েছে। গত দেড়-দুই মাস বাজারে বেশি আধিপত্য দেখিয়েছিল কাঁচামরিচ। আমদানি অব্যাহত থাকায় দাম কমে পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে গত ৮ থেকে ১০ দিনে দফায় দফায় বেড়ে ১৭০ টাকায় ওঠে ফার্মের ডিমের ডজন। ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানির হুমকিতে রথ থেমেছে পণ্যটির। সাদা ডিমের ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ এবং বাদামি রঙের ডিমের ডজন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। আগের মতোই সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বাজারে মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দাম কিছুটা বেশি। পাঙাশের কেজি ২০০ থেকে ২৩০ টাকা; মাঝারি আকারের তেলাপিয়া ২৩০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষের কই এবং শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ২৫০ থেকে ২৮০ এবং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে। মাঝারি আকারের রুই-কাতলার কেজি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকা, আর বড় আকারের রুই-কাতলা ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজারে খুব বেশি পরিবর্তন নেই। মোটা চালের কেজি ৫০ থেকে ৫২ টাকা, মাঝারি আকারের চাল ৫৪ থেকে ৫৮ এবং চিকন চালের কেজি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক। তবে নতুন করে শিম এসেছে বাজারে। কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার আশপাশে। এ ছাড়া বেশির ভাগ সবজির কেজি কেনা যাবে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। তবে করলা, গাজরসহ কয়েকটি সবজির দাম ৮০ থেকে ১২০ টাকায় দেখা গেছে।

সেগুনবাগিচা বাজার থেকে ১৫৫ টাকা দরে দুই ডজন ডিম কেনেন বেসরকারি চাকরিজীবী সাহাব উদ্দিন। সমকালকে তিনি বলেন, দিন দশেক আগেও ডিমের দাম ছিল ১৪০ টাকা। দাম কমলেও ডজনে ১৫ টাকা বেশি দিতে হয়েছে। হতাশা প্রকাশ করে সাহাব উদ্দিন বলেন, বাজারে তো সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। কিন্তু বেতন-ভাতা বাড়েনি। বাঁচতে তো হবে। সংসারে যা দরকার তার চেয়ে কম কিনতে হচ্ছে।

কারওয়ান বাজার থেকে ২৪০ টাকায় এক কেজি রসুন কেনেন আব্দুস সালাম। এনজিওতে কর্মরত সালাম বলেন, এক মাস আগে ১৪০ টাকায় রসুন কিনেছি। এখন কেজিতে ১০০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।




আর্কাইভ