তীব্র তাপদাহ চলছে দেশজুড়ে। এই তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন চলতে পারে বলে জানা গেছে। তীব্র গরমের সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখও বাড়ছে। এই গরমে সুস্থ থাকতে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো চোখেরও যত্নের প্রয়োজন।
চোখ শরীরের অত্যন্ত সংবেদনশীল অঙ্গ। গরমকালে চোখ সুস্থ রাখতে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গরমকালে চোখের অ্যালার্জি ও ক্ষেত্রবিশেষ চোখ ওঠা রোগটাই বেশি দেখা যায়। অ্যালার্জি সাধারণত শিশুদের বা অল্প বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। কী কারণে এমন হয়, তার সঠিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। এ জন্য আবহাওয়াগত কারণকেই দায়ী করা হয়।
বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে গাছের ফুল, মুকুল থেকে পরাগরেণু বাতাসে ওড়ে, বাতাসের শুকনা বা ভেজা ভাব থাকে। প্রচুর ধুলাবালিও দেখা যায়। এর ফলে চোখের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বাড়ে। এ রোগের লক্ষণগুলো হলো চোখ খচখচ করা, পানি আসা, চোখ চুলকানি, লাল হয়ে চোখের পাতা ফুলে যাওয়া, সুতার মতো পিচুটি আসা এবং অনেক ক্ষেত্রে চোখে দৃষ্টি ঝাপসাও হতে পারে। এর সঙ্গে যদি জীবাণু সংক্রমিত হয়, তাহলে ঘুম থেকে উঠলে চোখ খোলা যায় না। ময়লা কেতোরে চোখ ভরে যায় (যা চোখ ওঠা পর্যায়ভুক্ত)।
এ ছাড়া গরমকালে বাতাসে জলীয় বাষ্প কমলে চোখের শুষ্কতা দেখা যায়।
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের চোখের জন্য অনেক সময় ক্ষতি বয়ে আনে। যেমন– চোখের লেন্সে ঘোলা বা ছানি পড়া অন্যতম। এ ছাড়া চোখের স্নায়ুস্তরেও সমস্যা হতে পারে। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রয়োজন ছাড়া গরমে ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না। রঙিন চশমা পরতে হবে। সেই সঙ্গে শরীরে সানস্ক্রিন মাখা যেতে পারে। ধুলাবালি থেকে দূরে থাকতে হবে। তা ছাড়া বিভিন্ন মৌসুমি ফলগাছের নিচে যাওয়া থেকে বিরত থাকা, পুকুরে বা খালের পানিতে গোসল করা এড়াতে হবে।
চোখে কোনো ধরনের সমস্যা হলে চোখ ডলাডলি করা উচিত নয়। একটা পরিষ্কার কাপড়ে কয়েক টুকরা বরফ জড়িয়ে ৫ মিনিট চোখে ধরে রাখলে আরাম লাগবে। চুলকানি ভাবটা চলে যাবে, আবার লালচে ভাবটাও কেটে যাবে।
সমস্যার সমাধান না হলে চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি অ্যালার্জি বা জীবাণুনাশক ওষুধ ও পরামর্শ দিয়ে সুস্থ থাকতে সহযোগিতা করবেন।
লেখক : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফেকো সার্জন, যশোর চক্ষু ক্লিনিক অ্যান্ড ফেকো সেন্টার।