উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে করণীয়

প্রথম পাতা » ফিচার » উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে করণীয়


ফাইল ছবি

ব্যস্ত নগরজীবনে বাড়ছে মানুষের ব্যস্ততা, সেই সঙ্গে বাড়ছে মানসিক চাপ। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তের হার। বাংলাদেশে সঠিক পরিসংখ্যান জানা না থাকলেও ধারণা করা হয়, বাংলাদেশের ১০ থেকে ২০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। অর্থাৎ এ দেশে উচ্চ রক্তচাপের রোগী দেড় কোটির বেশি। উচ্চ রক্তচাপ যে কতটা ভয়ংকর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ফেইলিওর, অন্ধত্ব– সবই উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা। ভয়ংকর এ জটিলতাগুলো কিন্তু প্রতিরোধ করা সম্ভব শুধু উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করার মাধ্যমে।

দেশে ফাস্টফুডের ব্যাপক প্রচলন ও শারীরিক পরিশ্রমের অনীহার কারণে বাড়ছে স্থূলতা। এটি কিন্তু বেশ বিপজ্জনক। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ওজনের কারণে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তের হার বাড়ে ২ থেকে ৬ গুণ। এমনকি অল্প পরিমাণে ওজন কমালে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তের হার কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তরা লবণের পরিমাণ কমিয়ে রক্তচাপ কমিয়েছেন। তাই খাবারে লবণের পরিমাণ কমান।

শুধু খাবারে লবণের পরিমাণ কমালেই হবে না, লবণযুক্ত বাইরের খাবারও কমাতে হবে। এমন খাবার হলো চানাচুর, শিঙাড়া, সমুচা, বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড, যেমন– কেক, পুডিং, বার্গার, স্যান্ডউইচ। এসব প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণ বেশি থাকে, তাই পরিহার করাই শ্রেয়। টেস্টিং সল্টও কিন্তু ক্ষতিকর। কোলেস্টেরল ও চর্বিসমৃদ্ধ খাবার, যেমন– ডিমের কুসুম, কলিজা, মাছের ডিম, খাসি বা গরুর চর্বিযুক্ত মাংস, হাঁস-মুরগির চামড়া, হাড়ের মজ্জা, ঘি, মাখন, ডালডা, চিংড়ি, পাম অয়েল, নারকেল পরিহার করতে হবে। বেশি বেশি খেতে হবে আঁশযুক্ত খাবার, যেমন– সব রকমের ডাল, শাকসবজি, ফল, বিশেষ করে খোসাসহ পেয়ারা, জাম্বুরা, আমলকী। বিভিন্ন ধরনের মাছ, যেমন– সামুদ্রিক মাছ, ছোট মাছ, মাছের তেল। এ ছাড়া উদ্ভিজ্জ তেল, যেমন– কর্ন অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, অলিভ অয়েল, সয়াবিন তেল, সরিষা তেল বেশি করে খান। যারা নিয়মিত পরিশ্রম করেন তারা অপরিশ্রমীদের চেয়ে ২০-৫০ শতাংশ কম উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হন। প্রতিদিন ৩০-৪৫ মিনিটের ব্যায়াম, যেমন– হাঁটাচলা, সাইকেল চালানো যথেষ্ট। বিড়ি-সিগারেট, অ্যালকোহলকে না বলুন। এটি উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধের অন্যতম উপায়। দুশ্চিন্তা রক্তচাপ বাড়ায়। দীর্ঘমেয়াদি দুশ্চিন্তায় দেখা দেয় উচ্চ রক্তচাপ। তাই কোনো বিষয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না। দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। রাগ, ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করুন। হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি, নিনস।




আর্কাইভ