রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার

প্রথম পাতা » ফিচার » রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার


রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার

রমজান মাসে আমাদের খাদ্য শৃঙ্খলায় কিছুটা ব্যত্যয় ঘটে। এ সময় দীর্ঘক্ষণ উপোস থাকতে হয়। ইফতার ও সেহরিতে অল্প সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খাওয়া হয়। এ ছাড়া এ সময় ঐতিহ্যগতভাবে বেশ কিছু খাবার আমাদের খাদ্য তালিকায় অনুপ্রবেশ করে। এর মধ্যে কোনো কোনো খাদ্য রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হু-হু করে বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের প্রায়ই রক্তে গ্লুকোজের আধিক্য সৃষ্টি হয়।
ইফতারের সময় অতিরিক্ত ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ১ হাজার ৫০০ কিলোক্যালরি ছাড়িয়ে যায়। ফিরনি, হালুয়া, জিলাপি, বুন্দিয়া, দই, মিষ্টান্নসহ বিভিন্ন মিষ্টিজাতীয় ফল ইফতারের খাদ্য তালিকায় থাকে। তা ছাড়া বিভিন্ন ধরনের শরবত তো রয়েছেই। ছোলা, মুড়ি, হালিমসহ আরও কত বাহারি নামে খাবারের প্রাচুর্য ইফতারের সময় লক্ষ্য করা যায়। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়।
অনেকেরই রোজার সময় স্থূলতা বৃদ্ধি পায়। সে জন্য রমজানের শুরুতেই খাদ্য পরিকল্পনা করা খুবই প্রয়োজন, বিশেষত ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে। ক্যালরি যাতে কম গ্রহণ করা না হয়, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
যেসব শর্করা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়, সেসব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। চিনি, ময়দা, কলে ভাঙানো চাল ইত্যাদি এ পর্যায়ে পড়ে। এসব খাদ্যের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। তন্তুজাতীয় শর্করা, গোটা শস্যদানা, শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ধীরগতিতে বৃদ্ধি করে। অর্থাৎ এসবের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলক কম। এসব খাবার গ্রহণ করতে কোনো বাধা নেই।
ইফতারের সময় দু-তিনটি ছোট খেজুর খাওয়া যেতে পারে। চিনির শরবত পরিহার করা উত্তম। চিনির তৈরি ফিরনি, জিলাপি, হালুয়া রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক নয় মোটেও। ছোলা, মুড়ি, হালিম এগুলো গ্রহণ করতে আপত্তি নেই। তবে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া পাকস্থলীতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
রোজা রেখে অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করতে হবে, যাতে দিনের বেলায় পানিশূন্যতা সৃষ্টি না হয়। চা-কফি ইত্যাদি পান না করাই উত্তম। কারণ, এগুলো শরীর থেকে পানি বের করে দেয়। সেহরি দেরিতে খাওয়া উত্তম। অনেক আগে সেহরি খেলে অথবা সেহরি না খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যেতে পারে।
লেখক : লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, বরিশাল।




আর্কাইভ