কিডনির পাথর প্রতিরোধে করণীয়

প্রথম পাতা » ফিচার » কিডনির পাথর প্রতিরোধে করণীয়


ফাইল ছবি

শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে কিডনির যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। কারণ, শরীরের রক্ত পরিশোধনকারী অঙ্গ হলো কিডনি। শরীরে জমে থাকা নানা ধরনের বর্জ্য পদার্থ পরিশোধিত হয় কিডনির মাধ্যমে।
কিডনিতে পাথর অপরিচিত কোনো রোগ নয়। এ পাথর কিডনি, কিডনির সঙ্গে সংযুক্ত মূত্রনালি বা মূত্রাশয়েও দেখা দিতে পারে। ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রে এই পাথর ক্যালসিয়াম অক্সালেট বা ক্যালসিয়াম ফসফেট গোত্রের হয়ে থাকে। এ ছাড়া ভাইট, ইউরিক এসিড এবং সিস্টিন গোত্রের পাথরও কিডনিতে জমা হতে পারে। ছেলে ১৩ শতাংশ ও মেয়ে ৭ শতাংশ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। চিকিৎসা সঠিকভাবে না করলে পরবর্তী পাঁচ বছরে আক্রান্তের ঝুঁকি ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায়।
জীবনধারণ প্রণালি তথা খাবার ও পথ্যের সুষম বিন্যাসের মধ্য দিয়ে একজন মানুষ কিডনি পাথর থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন। এ লক্ষ্যে আমেরিকান কলেজ অব ফিজিশিয়ান কিডনি পাথর প্রতিরোধ সম্পর্কীয় নির্দেশিকা বা গাইড প্রণয়ন করেছে। প্রখ্যাত মেডিকেল জার্নাল অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিনে এ সম্পর্কিত তথ্যও প্রকাশিত হয়েছে। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়, কিডনি পাথর প্রতিরোধে নিম্নলিখিত নিয়মাবলি পালন করতে হবে।
• যাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার ইতিহাস রয়েছে, তাদের দৈনিক পানি গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে হবে। দৈনিক দুই লিটার পানি পান করতে হবে।
• যারা কিডনিতে পাথরের ভীষণ ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাদের জন্য শুধু অধিক পানি গ্রহণ নয়; মূত্রবর্ধক থায়াজাইড ওষুধ, সাইট্রেট ও এলো পুরিনন পাথরের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে।
• রোগীদের অবশ্যই জীবনধারণ প্রণালির পরিবর্তন আনতে হবে। যে কোনো কোলা বা পানীয়, যা মাত্রাধিক ফসফরিক এসিড সমৃদ্ধ, তা এড়িয়ে চলতে হবে। যেসব ফলের রসে সাইট্রিক এসিড রয়েছে, তা এর আওতায় পড়বে না।
এ ছাড়া যেসব সবজিতে মাত্রাধিক অক্সালেট রয়েছে, সেসব খাদ্য গ্রহণেও সাবধান হতে হবে।
কিডনিতে পাথর হলে সাধারণত যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়–
• পিঠে, দুই পাশে ও পাঁজরের নিচে ব্যথা হওয়া ও তলপেট এবং কুঁচকিতে ব্যথা ছড়িয়ে যাওয়া।
• প্রস্রাব ত্যাগের সময় ব্যথা হওয়া।
• প্রস্রাবের রং গোলাপি, লাল অথবা বাদামি হওয়া।
• বারবার প্রস্রাবের বেগ পাওয়া।
• যদি কোনো সংক্রমণ হয়ে থাকে, তাহলে জ্বর এবং কাঁপুনি হওয়া।
• বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া।
এসব উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
লেখক : কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ।




আর্কাইভ